ত্রিশাল থানা সৃষ্টি হয় ১৯০৯ সালে। ১৯৮৩ সালে ত্রিশাল থানাকে ১২টি ইউনিয়ন ও ৯১টি মৌজা নিয়ে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়
।
আভিধানিকভাবে ত্রিশাল শদের অর্থ তিন শালের সমাহার।ত্রিশাল নামের ইতিহাস
সম্পর্কে বেশ কিছু কথা প্রচলিত রয়েছে। জানা যায় যে, এখানে এক সময় কোণ
ত্রিশুলধারী ব্যাক্তি এসেছিলেন। আবার অনেকে বলেন এ অঞ্ছলে তিনটি বড় শাল গাছ
ছিল যা থেকে এ অঞ্চলের নাম হয় ত্রিশাল। এ তথ্য দুটির কোনটি-ই যুক্তি
গ্রাহ্য নয়। যে তথ্যটি সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য তা হচ্ছে এ অঞ্চলে
প্রথম যখন মানব বসতি শুরু হয় তখন এখানে নদী নালা, খাল-বিল, হাওরের সংখ্যা
ছিল অনেক। পুরো অঞ্চল জুড়ে ছিল গহীন অরণ্য। হিংস্র জীবজন্তু হতে রক্ষার
জন্য জনগণ তাদের বাড়ীর দিকে উঁচু প্রাচীর তুলে দিত।আর এ উঁচু দেয়ালকে বলা
হত আল। তখন বাড়ীকেও আল বলা হত।ত্রিশালে অনেক বড় বড় আল বা বাড়ী গড়ে উঠেছিল।
কোন মানব দল এ অঞ্চলে বাস করতে আসলে তাদের ত্রিশ আল বা বাড়ীর যে কোন একটি
বাড়ীর অন্তর্ভুক্ত হতে হত। ত্রিশ আল থেকেই বর্তমানে ত্রিশাল নামের উতপত্তি
হয়েছে। আল সম্পর্কে প্রখ্যাত ঐতিহাসিল আবুল ফজল বলেছেন প্রাচীন কালে এ
দেশের রাজারা ১০ গজ উঁচু ও ২০ গজ চওড়া প্রকান্ড আল বা বাঁধ নির্মাণ করতেন।
ত্রিশাল শব্দটির আভিধানিক অর্থ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় ত্রি অর্থ তিন এবং শাল
অর্থ গৃহ। আভিধানিক অর্থের পাশাপাশি এ অঞ্চলের নামের উৎপত্তি সপর্কে যে সব
মত প্রচলিত আছে তার মধ্যে এটি-ই সবচেয়ে বেশী গ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়।
ভৌগলিক পরিচিতি
ত্রিশাল উপজেলার উত্তরে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা, দক্ষিণে ভালুকা ও গফরগাঁও উপজেলা, পূর্বে ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল ও গফরগাঁও উপজেলা এবং পশ্চিমে ফুলবাড়িয়া উপজেলা অবস্থিত।
নদীবিধৌত পাললভূমি নিয়ে গঠিত বলে ত্রিশাল অত্যন্ত উর্বর সমভূমি। এ অঞ্চলে মাছ চাষ ও ফসল উৎপাদনের সুবিধার্থে বহু বহিরাগত জনগোষ্ঠীর আগমন ঘটেছে। ১৯৮৩ সালে ত্রিশাল থানাকে ১২টি ইউনিয়ন ও ৯১টি মৌজা নিয়ে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।
0 Comments